যুগে যুগে দেশকে ভালোবেসে দেশের জন্য যাঁরা কাজ করেছেন, দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা আজ স্মরণীয়। কিন্তু তাঁরা দেশ বা দেশের মানুষের কাছ থেকে পাইনি তেমন কোনো সম্মাননা। তবুও দেশের টানে অবিরত ছুটে চলেছেন তাঁরা। তাঁদের কাছে অর্থের চেয়ে, সংসার ধর্মের চেয়ে মানবতার সেবাই ছিল সর্বাগ্রে। যদিও মানুষের জন্য তাঁরা ত্যাগ স্বীকার করতেন তবুও ঐ মানুষগুলোই তাঁদের পাগল, মূর্খ ও জ্ঞানহীন বলে আখ্যা দিত। কালের বিবর্তনে যখন মানবতার ঐসব ফেরিওয়ালা বিদায় নিতেন তখন তাঁদের অনুপস্থিতি উপলব্ধি করতে পারতো দেশের মানুষ। এসবকিছু জানার পরও রয়েছে শত শত মানবতার ফেরিওয়ালা। তেমনি একজন পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার আহম্মদপুর গ্রামের সন্তান জুয়েল রানা। তিনি ছোটবেলা থেকেই চারিত্রিক গুণাবলী সম্পন্ন, মেধাবী, ছবি আঁকা ও হাতের লেখায় পটু ছিলেন। ফলে মাত্র আট বছর বয়সেই তিনি নিজ এলাকার মানুষের আস্থা অর্জন করেন। এই আস্থার দরূণ তখন থেকেই স্থানীয় শিশুদের হাতের লেখা ও ছবি আঁকার শিক্ষা দিতে শুরু করেন। এরমধ্য দিয়েই শুরু হয় শিক্ষকতা জীবন। ছবি আঁকা শিখিয়ে যে সম্মানী পেতেন তা নিজের লেখাপড়া ও গরীব শিশুদের বই কিনে দিতে ব্যয় করতেন। এছাড়াও তিনি দেশের জাতীয় দিবসগুলো যে কোনো মূল্যে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় উদযাপন করতেন। দিনে দিনে হয়ে উঠলেন একজন সুনামধন্য মেধাবী শিক্ষার্থী ও শিক্ষক। সেদিন যদিও কেউ তাঁর বিষয়ে তেমন কোনো আঁচ করতে পারেননি তবে তিনি বর্তমানে একনাগারে একজন চিত্রশিল্পী, শিক্ষক, লেখক, উদ্ভাবক, দার্শনিক, সমাজসেবক ও জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন সাংবাদিক।
গাজীপুর ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ থেকে জুয়েল রানা দর্শন বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৭ সালে ৯ম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় আত্রাই মেমোরিয়াল স্কুলের ড্রইং শিক্ষক হিসেবে নিজের আত্মপ্রকাশ ঘটান। এরপর থেকে অদ্যাবধি ছুটে চলেছেন দেশের নতুন প্রজন্মকে সুশিক্ষা দানের মাধ্যমে সুন্দর সমাজ ও দেশ গঠন করতে। তিনি জীবনের বিভিন্ন ধাপে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য ছিল কাশিনাথপুর আব্দুল উচ্চ বিদ্যালয়, অরবিট প্রি-ক্যাডেট এ্যান্ড হাইস্কুল, কাশিনাথপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নাটিয়াবাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও বর্ণমালা প্রি-ক্যাডেট একাডেমি। এছাড়াও গাজীপুরে এম হাবিজ উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কালিয়াকৈর শিল্পকলা একাডেমি ও আল ফারাবী স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। গাজীপুরে এম হাবিজ উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজে থাকাকালীন ২০২০-২১ সালে যখন দেশের মানুষ করোনা মহামারীতে মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন তখন তিনি শিক্ষার ধারা অব্যাহত রাখতে মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে ছুটে চলেছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। যুগোপযুগী প্রযুক্তি, কৌশল ও বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে অসামান্য অবদান রাখেন দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে। ফলে ২০২২ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কারের জন্য বেসরকারি ক্যাটাগরিতে তিনি মনোনীত হন। কিন্তু দুঃখের বিষয় সে বছর রিজার্ভ সংকটের কারণে বেসরকারি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হয়নি। এছাড়াও ২০২১ সালের ১৬মার্চ বাংলাদেশ টেলিভিশনে তাঁর বাংলা ক্যালিগ্রাফির উদ্ভাবনী সংবাদ প্রচারিত হয়। ফলে দেশব্যাপী বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হন তিনি। শুধু তাই নয়, ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এস এর বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি অর্জন করেন আহম্মদপুর ইউনিয়নের প্রথম স্যাটেলাইট টেলিভিশন সাংবাদিকের মর্যাদা।
https://shorturl.fm/skFjT